কত গুণ তার ছিলো বলে শেষ করা যাবে না। গান গেয়ে সাফল্য পেয়েছেন, অভিনয় করে সাফল্য পেয়েছেন, পরিচালনা করে সাফল্য পেয়েছেন; চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবেও সফল ছিলেন। প্রেমিক হিসেবে জয় করেছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নায়িকাদের একজন মধুবালাকে।
ঈর্ষনীয় এক জীবন নিয়ে পৃথিবীতে কিংবদন্তি কিশোর কুমারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দেখতে দেখতে ৩৩ বছর পেরিয়ে গেল তার প্রস্থানের। কিশোর কুমার ১৯৮৭ সালে ১৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
কিশোর কুমারের পুরো নাম আভাস কুমার গাঙ্গুলি। অসাধারণ প্রতিভাধর এই মানুষটি ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্লেব্যাক গায়কদের অন্যতম। হিন্দির পাশাপাশি তিনি প্রচুর জনপ্রিয় বাংলা সিনেমাসহ বাংলা আধুনিক গানও গেয়েছেন। তামিল-তেলেগুসহ নানা ভাষায় আছে তার গাওয়া জনপ্রিয় গান।
সাধারণত গায়ক হিসেবে তাকে দেখা হলেও তিনি হিন্দি সিনেমা জগতের একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতাও ছিলেন। ছবিতে অভিনয় ও কণ্ঠ দেওয়া ছাড়াও তিনি সফলভাবে গীতিকার, সুরকার, প্রযোজক, পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকারের ভূমিকা পালন করেছেন।
কিশোর কুমার ১৯২৯ সালের ৪ আগষ্ট ভারতের মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়াতে এক মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কুঞ্জলাল গাঙ্গুলি ছিলেন একজন উকিল। মায়ের নাম গৌরী দেবী।
চার ভাই বোনের মধ্যে কিশোর ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। সব থেকে বড় ছিলেন অশোক কুমার তারপর সীতা দেবী। তারপর অনুপ কুমার আর অনুপ কুমারের থেকে পাঁচ বছরের ছোট ছিলেন কিশোর কুমার। কিশোরের শৈশবকালীন সময়েই তার বড়দা অর্থাৎ জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অশোক কুমার বোম্বেতে হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে বড় সাফল্য পান। এই সফলতা ছোট্ট কিশোরের উপরে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
কিশোর কুমার সর্বমোট ২,৭০৩টি গান গেয়েছেন। যার মধ্যে ১১৮৮টি হিন্দি সিনেমায়, ১৫৬টি বাংলা এবং অন্যান্য ভাষায় গান গেয়েছেন। তিনি ৮বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়ে ভারতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পুরস্কার জয়ী গায়ক হিসেবে আজও প্রথম স্থান ধরে রেখেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে কিশোর কুমার ছিলেন প্রেমিক পুরুষ। তিনি প্রেমে পড়তে ভালোবাসতেন। বিয়ে করেছিলেন চারবার। তার স্ত্রী ছিলেন রুমা গুহ ঠাকুরতা (১৯৫০-১৯৫৮), মধুবালা (১৯৬০-১৯৬৯), যোগিতা বালী (১৯৭৫-১৯৭৮) এবং লীনা চন্দাভারকর (১৯৮০-১৯৮৭)।
নুসরাত কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত