শিক্ষামন্ত্রী ডা দীপু মনি বলেছেন, অনার্সের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ছাড়া ডিগ্রি দেয়া ঠিক হবে না। কারণ এই ডিগ্রি নিয়ে তারা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবেন। এক্ষেত্রে তাদের কর্মক্ষেত্রেও অন্যভাবে দেখা হতে পারে।
বুধবার (২১ অক্টোবর) মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, অনার্সের শিক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন তাদের কিছু পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। আর কিছু পরীক্ষা বাকি আছে। তারা অটোপাসের দাবি জানাচ্ছেন সার্বিক বিবেচনায় অনার্সের শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়া ঠিক হবে না।
করোনার কারণে বন্ধ থাকা সারাদেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে তিনি আরও জানান, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা হবে না। এর পরিবর্তে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করা যায় এমন সিলেবাস তৈরি করেছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এই সিলেবাসটি সব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো হবে। প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের সেই সিলেবাসের ওপর প্রতি সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সেই অ্যাসাইনমেন্ট করে স্কুলে জমা দেবেন। শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবেন । কোন মার্কিং বা গ্রেডিং দেয়া হবে না।
উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থী ৭ম শ্রেণিতে উঠতে নূ্ন্যতম যতটুকু শিখনফল অর্জন করতে হয় তা নিশ্চিত করতেই এই পদ্ধতি। শিক্ষার্থীরা যে ক্লাসে এখন পড়ছে সেই শ্রেণিতে কাঙ্খিত শিখনফল অর্জনই আমাদের লক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম অংশ নেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, অ্যাসাইনমেন্টগুলো থেকেই শিক্ষকরা দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করবেন। পরবর্তী অর্থবছরে তাদের বিশেষ পরিচর্যার ব্যবস্থা করবেন। কোন শিক্ষার্থী যদি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে অবস্থান করে, তাহলে সে তার নিকটবর্তী প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইন্টমেন্ট নিতে পারবেন ও জমা দিতে পারবেন।
ভর্তি ও এসএসসি নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, এবার পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ক্লাসে যাবেন। আগামী জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠানোর উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘আপনাদের কি মনে হচ্ছে? আমরা টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সাথে যোগাযোগ করছি। কিছু দেশে স্কুল খুলে দিয়েছিল, এখন বন্ধ করে দিচ্ছে। আর শীত নিয়ে সবারই শঙ্কা আছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অনলাইন ক্লাসের সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছি।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য অনলাইন ও টেলিভিশনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, ইবতেদায়ি সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
নুসরাত কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত